বিশেষ প্রতিনিধি:
সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে প্রেমিককে গাছে বেঁধে প্রেমিকাকে গণধর্ষণের মামলায় ৭২ ঘন্টার মধ্যে ০১ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৯।
র্যাব-৯,সিলেট এর সহকারী পুলিশ সুপার মিডিয়া অফিসার মোঃ মশিহুর রহমান সোহেল জানান,প্রাপ্ত গোয়েন্দা সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৯,সিপিসি-৩, সুনামগঞ্জ এর একটি আভিযানিক দল গত মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রাত ১০:৫০ মিনিটের সময় সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানাধীন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সিএনজি চালক আসামী মোঃ আব্দুল করিম (৩২),সাং- কামারগাঁও,থানা- দোয়ারাবাজার, জেলা- সুনামগঞ্জকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে গ্রেফতারকৃত আসামীকে সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়াও,উক্ত মামলার অন্যান্য পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-৯ এর চলমান গোয়েন্দা তৎপরতা ও অভিযান অব্যাহত থাকবে।
মোঃ মশিহুর রহমান সোহেল বলেন,মামলার বিবরণে জানা গিয়েছে যে,ভিকটিমের প্রেমিক মোঃ নুরুজ্জমাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভিকটিমের পাশের বাসায় (বর্তমান) থেকে রাজমিস্ত্রির কাজ করত। সেই সুবাধে মোঃ নুরুজ্জমাল এর সাথে ভিকটিমের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সম্পর্কের একপর্যায়ে তারা দুজনে বিবাহের সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রেমিক মোঃ নুরুজ্জমাল এর স্থায়ী বাড়ি সুনামগঞ্জ হওয়ায় তারা গত শুক্রবার (০৮ মার্চ) দুপুরে বিবাহের কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া (বিশ্বরোড) থেকে বাসযোগে সুনামগঞ্জ এর উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে রাত আনুমানিক ১২:০০ টায় সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক বাসস্ট্যান্ডে নেমে সিএনজি যোগে দোয়ারাবাজার থানাধীন কাটাখালী বাজারে পৌঁছে।
অতঃপর পরেরদিন শনিবার (০৯ মার্চ) রাত আনুমানিক ০১:০০ ঘটিকায় কাটাখালী বাজার হতে সুনামগঞ্জ যাওয়ার উদ্দেশ্যে সিএনজির জন্য অপেক্ষা করাকালীন সময়ে আসামী সিএনজি চালক আব্দুল করিম ও অপর ০২ জন আসামীর সঙ্গে দেখা হয়।
একপর্যায়ে আসামীরা তাদেরকে পুলিশের ভয়ভীতি দেখায় এবং অপর আসামী মোঃ আফছার উদ্দিনকে ডেকে আনেন। তারা ভিকটিম ও তার বন্ধুকে দোয়ারাবাজার থানাধীন জালালপুর এলাকার আসামী মোঃ ফয়জুল বারীর টিনসেড ঘরের পশ্চিম পাশের রুমে থাকতে দেয়।
পরবর্তীতে,ভিকটিমের প্রেমিক মোঃ নুরুজ্জমালকে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে রাত আনুমানিক ০২:২০ ঘটিকা থেকে ০৪:০০ ঘটিকা পর্যন্ত আসামীরা ভিকটিমকে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে। ঘটনার পর আসামীরা তাদেরকে সুনামগঞ্জ পৌঁছে দেয়ার কথা বলে আসামী আব্দুল করিম এর সিএনজি যোগে আমবাড়ী বাজার নামিয়ে দিয়ে চলে যায়।
উক্ত ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে ০৪ জনের নাম উল্লেখ করে সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার থানায় গত রবিবার (১০ মার্চ) একটি গণধর্ষণ মামলা দায়ের করেন (মামলা নং- ৬/৩৩)। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি মিডিয়ার মাধ্যমে সুনামগঞ্জসহ দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে আসামীদের আইনের আওতায় আনতে র্যাব-৯ এই ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করে।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের নৃশংস ও ঘৃণ্যতম অপরাধ বিশেষ করে মাদক উদ্ধার, ধর্ষণ, মানবপাচার, হত্যা মামলা, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, জঙ্গি দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, বনদস্যু/জলদস্যু, ডাকাত ও ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। ধর্ষণসহ যে কোন ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে র্যাবের প্রতিটি সদস্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে জনসাধারণের জন্য একটি নিরাপদ বাসযোগ্য সমাজ তথা দেশ বিনির্মাণে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সিলেট নিউজ২৪/এসডি.