বিএস বিদ্যুৎ ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে অবৈধ মালিকানা দাবি করে জবর দখলের ষড়যন্ত্রে পর পর দুটি ঘটনায় একটি সেচ পাম্পের ট্রান্সফরমার ও বিদ্যুৎ বোর্ডসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ চুরির অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কাটাবাড়ী ইউপির কাঁঠালবাড়ী গ্রামে। চুরির প্রথম ঘটনায় সেচের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ অভিযুক্তরা বাড়িতে নিয়ে রাখা স্বীকারের তথ্য প্রমাণের ভিডিও তথ্য থাকা এবং দ্বিতীয় ঘটনায় মূল্যবান দুটি ট্রান্সফরমার চুরির প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষী থাকলেও ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ নিতে গড়িমসি করছে থানা কর্তৃপক্ষ। বাধ্য হয়ে প্রথম ঘটনায় সিআর মামলা ৪৫৩/২৪ (গোবিন্দগঞ্জ চৌকি আদালত) দায়ের করেন গোলাম মোস্তফা।
এদিকে প্রথম ঘটনায় থানা তদন্ত করাকালে গত ১৭ অক্টোবর দিবাগত রাতে (দ্বিতীয় ঘটনা) অভিযুক্ত ব্যক্তিরা অজ্ঞাত ব্যক্তিদের সাথে নিয়ে ট্রান্সফরমার নামিয়ে এর ভেতরের মূল্যবান অংশ চুরি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গোলাম মোস্তফা একই গ্রামের এমদাদুল হক, আব্দুস সোবহান, বুলু মিয়া, আব্দুর রউফ, জহুরুল ইসলাম, রব্বানীদের অভিযুক্ত করে থানায় চুরির লিখিত এজাহার থানায় জমা দেয়। যা রেকর্ডে তালবাহানা করছে কর্তৃপক্ষ।
ভুক্তভোগী জানান, প্রথম ঘটনায় আমাদের চুরি যাওয়া জিনিসপত্র অভিযুক্তদের বাড়িতে দৃশ্যমান এবং তাদের দাম্ভিক স্বীকারোক্তির ভিডিও ক্লিপ তদন্তকারী অফিসার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেখালেও তারা তা জব্দ বা কাউকে আটক করেনি। আর ট্রান্সফরমার চুরির বিষয়ে থানায় লিখিত এজাহার দিলেও থানা তা নিতে তালবাহানা করছে। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং সেচপাম্প ও বিদ্যুতের মূল্যবান যন্ত্রাংশ উদ্ধারের দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন থেকে খাজা মিয়ার ছেলেরা নিজেদের মালিকানায় সেচ কাজ পরিচালনা করে আসছে। সেচ পাম্প বসানো জমির মালিকনা, সেচ লাইসেন্স এবং বিদ্যুত সংযোগও তাদের।
থানার দায়িত্বে থাকা ওসি (তদন্ত) ইকবাল পাশা জানান, একই ব্যক্তি বাদি হয়ে গোবিন্দগঞ্জ চৌকি আদালতে করা কয়েকদিন আগের ঘটনায় একটি সিআর মামলা থানায় তদন্তাধীন।
প্রসঙ্গত, উপজেলার কাঁঠালবাড়ী গ্রামের মৃত খাজা মিয়ার ছেলে গোলাম মোস্তফা গংদের মালিকানাধীন (কাঁঠালবাড়ী মৌজার জেএল নং-১২৬, খতিয়ান নং-৩৮৫/২৬৬, দাগ নং-৪০/৩৯৩, লাইসেন্স নং-গ/৩২৮৭) সেচ পাম্পটি আদালত দ্বারা মিমাংসিত বিষয়। যেটি বিআরডিবির কর্তৃক দেয় ঋণে কাঁঠালবাড়ী কৃষক সমবায় সমিতি দ্বারা প্রতিষ্ঠাকাল ছিল ১৯৮২-৮৩। পরবর্তীতে ঋণদাতা কর্তৃপক্ষ প্রস্তাব দেয়, ঋণ পরিশোধ করিলে গভীর নলকূপটির মালিকানা হস্তান্তর করা হবে। সেই মোতাবেক তারা সোনালী ব্যাংক নামীয় রশিদে ৭৮ হাজার ৮৩৬ টাকা পরিশোধ করে। একই সঙ্গে খাজা মিয়া গং বাদী হয়ে মালিকানা দাবি করে দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা করে। ওই মামলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা চান এবং বাদী নিষেধাজ্ঞা যপায়।
সবেশেষ গত ১০ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখ হতে জোরপূর্বক গোলাম মোস্তফা গংদের নলকূপ এরিয়ায় যেতে দিচ্ছে না অভিযুক্তরা।