পলাশ পাল ঃ
হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার ৪ নং দক্ষিণ পশ্চিম ইউনিয়নের যাত্রা পাশা দেবাল দীঘির পাড়ে অবস্থিত ঐতিহ্য বাহী শ্রী শ্রী শ্যামবাউল গোস্বামীর আখড়া।
বানিয়াচং উপজেলার সর্বজন পরিচিত ঐতিহ্য বাহী এই আখড়ায় নেই কোন সরকারি অনুদান। এমনকি আখড়া প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা দিয়ে পায়ে হেটে যাওয়াটা ও কষ্ট কর হয়ে দাঁড়ায়।
দীর্ঘ ১৫ বছরে ও হয়নি এই রাস্তাটির কোন রকম সংস্করণ।
প্রায় ৪ শ’ বছর আগে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ গোস্বামীর আখড়া (বিথঙ্গল বড় আখড়া)।
শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ গোস্বামীর শিষ্য ছিলেন শ্রী শ্রী শ্যামবাউল গোস্বামী ।
মতবিরোধের কারণে রামকৃষ্ণ গোস্বামীর নির্দেশ অনুযায়ী শ্রী শ্রী শ্যামবাউল গোস্বামী বানিয়াচং এসে এলাকা বাসীর সহযোগিতায় আখড়া প্রতিষ্ঠা করেন।
বর্তমানে এই আখড়া পরিচালনায় রয়েছেন শ্রী শ্রী আশুতোষ মোহান্ত গোস্বামী।
হত্যার উদ্দেশ্যে ২০১৮ সালে সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত হন মোহান্ত গোস্বামী।
দীর্ঘ দিন অসুস্থতার পরে অনেকটা সুস্থ হলেও ২০১৯ সালের শেষের দিকে ব্রেইন স্ট্রোক হয়ে বর্তমানে সজ্জা সায়ী,, শ্রী শ্রী শ্যামবাউল গোস্বামীর আখড়ার সেবায়েত এর উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতি বাদে হবিগঞ্জ জেলার হিন্দু ধর্মীয় বিভিন্ন সংগঠন সহ কয়েক হাজার শিষ্যরা হবিগঞ্জ কোর্টের সামনে মানব বন্ধন করেছিলেন।
হামলাকারী বেশ কয়েক জন আসামিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। মামলটি কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে।
বাংলাদেশ, ভারত, লন্ডন -আমেরিকা , সহ বিশ্বের এগারোটা দেশে শ্রী শ্রী শ্যামবাউল গোস্বামীর অসংখ্য শিষ্য রয়েছেন, প্রতি বছর বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত ভক্ত বৃন্দ এবং শিষ্যরা আসেন শ্রী শ্রী শ্যামবাউল গোস্বামীর আখড়া দর্শন করতে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে ১৫ বছর আগে দুই বার মন্দির সংস্কার করার জন্য অল্প কিছু টাকা সরকারী বরাদ্দ আসলেও এর পর থেকে আর কোন অনুদান আসেনি।
বিভিন্ন মসজিদ মন্দিরে সরকারি ভাবে সৌর বিদ্যুত বিতরণ করা হয়েছে, অনেক জায়গায় স্টিক লাইট দেওয়া হয়েছে কিন্তু এই আখড়ায় দেওয়া হয়নি কোন কিছু।
নির্বাচনের সময় সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং জনপ্রতিনিধি গণের বিভিন্ন আশ্বাস মিললে ও পরবর্তীতে আর উনাদের দর্শন মিলেনা।
প্রয়াত মন্ত্রী বাবু সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত যখন বানিয়াচং আজমিরীগঞ্জ সংসদীয় আসনের এম. পি নির্বাচিত হয়েছিলেন তখন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব সহ আখড়া পরিদর্শন করে গিয়েছিলেন এবং আশ্বাস দিয়েছিলেন যে এই আখড়ার রাস্থাটি পাকা করে দেওয়া হবে।
কিন্তু এলাকার লোকজনের মত বিরোধের কারণে রাস্থার অনুমোদন টি বাতিল করা হয়েছিল। বছর কয়েক আগে ইট সলিং করে অল্প একটু রাস্তায় কাজ করা হলেও সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তাটি চলাচল অযোগ্য হয়ে পরে। এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে স্কুল কলেজ সহ একটি মক্তবের দের শতাধিক ছাত্র ছাত্রী।
গত বছরে রাস্তাটি নাম মাত্র সংস্কার করা হলেও এখন আবার যেই লাউ সেই কদু।
প্রতি বছর আখড়া কর্তৃপক্ষের নিজ উদ্যোগে রাস্তাটি মেরামত করাতে হয়। এমনকি মন্দির সংস্কার।