মারুফ তালুকদার বিশেষ প্রতিনিধি বালাগঞ্জঃ মানুষ বসবাস করে সমাজে, একে অন্যের সাথে মিলেমিশে। সমাজের সংজ্ঞাটা কিছুটা কঠিন, একটা সুন্দর সমাজের বেশকিছু বৈশিষ্ট্য থাকে।
তবে, প্রথম বৈশিষ্ট্যই হলো মানুষের দলবদ্ধ হওয়া। যেটা সভ্যতার শুরু থেকেই মানুষের ছিল। আদিম মানুষেরা পশু শিকার করেছে দলবেঁধে। বনে-জঙ্গলে থেকেছে দলবেঁধে। হয়তো, সেই থেকেই মানুষের একতা দলবদ্ধতা সমাজ আর সামাজিকতা শব্দগুলোর জন্ম। বর্তমান সভ্যতা আগের অবস্থা থেকে অকল্পনীয় গতিতে এগিয়ে এ পর্যায়ে এসেছে। বর্তমান যুগ ডিজিটাল প্রযুক্তির, আছে নানারকম যন্ত্রানুসঙ্গ, যা মানুষের জীবনকে একদিকে সহজও করছে, অন্যদিকে পুরো পৃথিবীকেও এনে দিয়েছে হাতের মুঠোয়। কিন্তু, সেই সামাজিকতা, একতা, দলবদ্ধতা, ভালো আচার-ব্যবহার এবং সমাজ সংস্কারে এখন মানুষ কতটা সচেষ্ট? সমাজে বাস করার কারনে, প্রকৃতিগতভাবেই মানুষ মিলেমিশে থাকে। মানুষ মানুষের জন্য। এ কথাটা ভাবামাত্রই চোখের সামনে স্পষ্ট চিত্র ভেসে ওঠে, যেকোন সমস্যায় প্রতিকূলতায় প্রত্যেকটা মানুষ একে-অপরের পাশে দাঁড়াচ্ছে। একজন অন্যজনকে সাহায্য করছে। কিন্তু, এটাই হওয়া উচিত হলেও, বর্তমান সময়ে এসে যেন মানুষের সামাজিকতা অজানা কারণে অনেকটা ফিঁকে হয়ে গেছে। সবাই চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে একসঙ্গে থাকলেও, কেউ কার বিপদে-আপদে পাশে নেই। প্রত্যেকে ব্যস্ত যার যার ভাবনায়, স্বার্থে। একতা নেই। এই দূরত্ব থেকেই জন্ম হয়েছে নানা অনাচারের, যা সমাজকে কুরে কুরে খায়। সামাজিক সংগঠন শব্দের জন্ম ঠিক এখানেই। সমাজে সমস্যার যখন জন্ম, তখন সমস্যাকে প্রতিরোধ করতেই সামাজিক সংগঠন ও জন্ম নেয়। এই সামাজিক সংগঠন হলো সমাজের ভেতরেও নতুন এক সমাজ, যে সমাজের মানুষগুলো স্রোতের বিপরীতে এগুনোর স্বপ্ন দেখে। সমাজকে ঢেলে সাজিয়ে অনাচারগুলো দূর করতে চায়। সমাজকে আশার আলো দেখানোর চেষ্টা করে। এই সময়ে , সামাজিক সংগঠনগুলোর গুরুত্ব ব্যাপক। সমাজের অন্য দশটা মানুষকে সঠিক পথ দেখানো, সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াই, অপরাধ-কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়াসহ নানাবিধ কার্যক্রম করে যায় সামাজিক সংগঠন। সামাজিক কার্যক্রমগুলো মানুষকে সচেতন করছে, বেড়ে ওঠা তরুণদের সঠিক পথে থাকার অনুপ্রেরণা দিচ্ছে, ভালো কাজের উৎসাহ যোগাচ্ছে।
প্রত্যেকটা ভাল কাজের দৃষ্টান্ত অন্যের কাছে তোলে ধরা হচ্ছে যত্ন করে, যাতে সে মানুষগুলোও উৎসাহ পায়। ফিরে আসছে একতা, সহমর্মিতা। আজকের সমাজে দুর্নীতি, নারী নির্যাতন, খুন-ছিনতাই-রাহাজানীর মত যেসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে, প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে হলেও সামাজিক কার্যক্রমের মাধ্যমে এসব প্রতিরোধ করা সম্ভব। প্রত্যেকটা সামাজিক সংগঠন, তাদের কর্মী বাহিনী নিয়ে প্রস্তুত, সামাজিক অনাচার দূর করা জন্য।