মো. শরীফ উদ্দিনঃ
আজকে দেখছি এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোদ্ধে যুক্তি উপস্থাপন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই পোস্ট দিচ্ছেন! অনেকেই বলছেন পাইকারি দরে সবাই পাস করাটা অযৌক্তিক! আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, পরীক্ষার কারণেই হোক কিংবা অন্য কোনো কারণেই হোক একজন শিক্ষার্থী যদি পরীক্ষা চলাকালীন করোনায় আক্রান্ত হয় তাহলে সে কি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে? অংশগ্রহণ করতে চাইলেও কি আপনি জেনেশুনে তাঁকে এলাও করবেন? যদি সে না জানিয়ে অংশগ্রহণ করে তাহলে অন্যদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া কি ঠিক হবে? আর যদি সে অংশগ্রহণ করতে না পারে তাহলে তাঁর জীবন থেকে যে একটা বছর চলে যাবে সেটা কি আপনি এনে দিতে পারবেন? এখন আপনিই বলেন কোনটা উচিৎ? আমি শিউর জেনেশুনে আপনি তাঁর কাছেও যাবেন না।
শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিয়ে আমি নিজেও টেনশনে ছিলাম। পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন করতে যেয়ে প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের চেয়ে আমাদের বেশি অংশগ্রহণ করতে হয়। কারণ শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ বিষয়ে অংশগ্রহণ করলেও আমাদের বাধ্যতামূলকভাবে সকল পরীক্ষায় পরিচালনা করতে হয়। আর আমাদের শিক্ষার্থীরা জীবনে একবার সবাই পাস করলে আপনার সমস্যা কোথায়? মনে রাখতে হবে জীবনে চলার পথ আবিষ্কার করার চেয়ে জীবনে বেঁচে থাকাটাই আগে জরুরি। জীবন থাকলে জীবনে চলার পথও একটা আবিষ্কার হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।
শিক্ষার্থীদের বলবো, আজ তোমাদের জন্য এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মাধমে তোমাদের যাবতীয় দুশ্চিন্তার অবসান হলো। এখন তোমাদের উচিৎ পরবর্তী প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়া। কারণ এই সময়টাই তোমাদের জীবনের জন্য টার্ণিং পয়েন্ট। এখানে যারা ভালো করবে তাঁরাই জীবনে সফলকাম হবে। গণহারে সবাই পাস করলেও এখানে যারা ভালো করতে পারবেনা তাঁরা হয়তো আস্তাকুরেই চলে যাবে। কেউ কেউ হয়তো সেখান থেকেও বেরিয়ে আসবে। যাইহোক সবার জন্য শুভকামনা থাকলো। সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে সবাই এই সময়ে ঘরেই থাকবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে।
মো. শরীফ উদ্দিন,
প্রভাষক, বিশ্বনাথ সরকারি কলেজ। সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) সরকারি কলেজ স্বাধীনতা সরকারি কলেজ, কেন্দীয় কমিটি।