জগন্নাথপুর প্রতিনিধি :
দেশের বাইরে অবস্থান করে সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও গুজব রটানোর প্রবণতা বেড়ে চলেছে। তথ্য-প্রযুক্তির ফায়দা নিয়ে আবেগপ্রবণ তরুণসমাজকে বিপথে ঠেলে দেওয়ার অপচেষ্টায় তৎপর একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এরা বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করতেও দ্বিধা করছে না। গুজবের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাছিনা ও সরকারের মন্ত্রী, শীর্ষ রাজনীতিকসহ দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও।
দিনবদলের সনদ নিয়ে ২০০৮ সালে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার শপথ ছিল দলটির। এরপর প্রায় ১৩ বছর ধরে দলটি একটানা ক্ষমতায়। দেশও অনেকটা ডিজিটালাইজ হয়েছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহেমদ পলক বলেছিলেন, বাংলাদেশে গুজব ছড়াতে ও বিদেশে বসে সাইবার হামলা চালাতে একটি রাষ্ট্র প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অর্থ বিনিয়োগ করছে।
এ বিষয়ে বেশ কিছু প্রমাণ বাংলাদেশের হাতে এসেছে।
এ বিষয়ে জুনাইদ আহেমদ পলক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বলেন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়ার কিছু শহর থেকে সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হচ্ছে।
এদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগের সুযোগ বর্তমানে নেই। তবে তাদের নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়ে কাজ চলছে।
বিশেষ করে ইউটিউব ও ফেসবুক যাতে বাংলাদেশে তাদের সার্ভার ডাটা সেন্টার স্থাপন করে সে জন্য আইন প্রণয়নের চেষ্টা চলছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারবিরোধী প্রচার চালাতে গিয়ে দেশকে নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করছে চক্রটি। এরা মূলত অনলাইন বা ইন্টারনেটকে তাদের যোগাযোগ ও সাংগঠনিক কার্যক্রম বিস্তারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।
আর বিভিন্ন পেজের অ্যাডমিন বা ব্যবহারকারীরা বেশির ভাগই বিদেশে অবস্থান করে।
ফলে তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয় না। যুক্তরাজ্যে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন নিরাপদ বাংলাদেশ চাই ইউকে, ইকুয়াল রাইট, অনলাইন একটিভিস্ট, জাস্টিজ ফর ভিকটিম, সহ নানান নামে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপতত্রতা চালাচ্ছে।
বিগত কয়েক মাস ধরে পূর্ব লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে নিয়মিত সভা সমাবেশ করে যাচ্ছে। সেই সব সভায় নেতৃত্ব দেন যুব দলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা আশিকুররহমান আশিক,এম,সালাম, ব্যরিসটার আবু বক্কর মোল্লা, মুসলিম খান, তরিকুল ইসলাম, মোঃআসয়াদুল হক, দিলোয়ার হোসেন, জয়নাল আবেদীন, তাহমিদ হোসেন খান, আবু তাহের, সাইফুর রহমান পারভেজ, মোহাম্মদ আলী, আলী হোসেন, করিম মিয়া, আবদুস সালাম খান, মাহফুজুর রহমান সহ অনেকে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন আইন হলে বিদেশে অবস্থান নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেশের বিরুদ্ধে যারা অপতত্রতা চালাচ্ছে তাদের দেশে বিচারের আওতায় আনা যাবে। মূল আইনের ৭১ ধারায় টেলিফোনে আড়িপাতার অপরাধ সম্পর্কে শুধু টেলিফোনে আলাপের কথা বলা আছে। সংশোধনীর খসড়ায় টেলিফোনে আলাপের সঙ্গে টেলিযোগাযোগ মাধ্যমে ভাবের আদান-প্রদান বিষয়টিও যুক্ত করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মোস্তাফা জব্বার আরো বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপত্তিকর মন্তব্য ও অপপ্রচারের বিষয় আমরা মনিটরিং করি এবং কনটেন্টগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের (ইউটিউব ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম) কাছে পাঠিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলি। ওরা কিছু বিষয়ে অনুরোধ রাখে, আবার কিছু বিষয়ে সাড়া দেয় না।
সার্বিক বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সে লক্ষ্যে আইন সংশোধনের কাজ চলছে।’
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহেমদও বলেন, ‘গুজব নিয়ন্ত্রণে ২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুমোদন করা হয়েছে, এজেন্সি স্থাপনের কাজও চলমান।
এ ছাড়া নিরাপদ অনলাইন ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার অংশ হিসেবে ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।
সেখান থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজও শুরু হয়েছে। আমরা সারা দেশে ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে ফ্যাক্ট চেকিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছি।’