রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০১ পূর্বাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরি গিলে খাচ্ছে বাদশাহ ও এমডি সিন্ডিকেট

সিলেট নিউজ ডেস্ক / ১৫৮ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

ছাতক প্রতিনিধি:

বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি)’র আলোচিত কর্মকর্তা আব্দুর রহমান বাদশা আবারো ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরির ব্যালেন্সিং মর্ডানাইজেশন রেনোভেশন এন্ড এক্সপেনশন প্রকল্পের পিডির দায়িত্বে। বিসিআইসির প্রতিষ্ঠান ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরি এবং কর্নফুলী পেপার মিলে (কেপিএম) কর্মরত অবস্থায় ব্যাপক অনিয়ম-দূর্নীতি ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছিলো। ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরি থেকে একাধিক বার তদন্ত ও বদলি হলে পুনরায় তিনি নিজের ঠাঁই করে নিয়েছেন ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে।আগে ছিলেন নতুন প্রকল্পের ডিপিডি,বর্তমানে ওই প্রকল্পের পিডির দায়িত্বে তিনি।

প্রথমে কারখানার তৎকালিন ব্যাবস্থাপনা পরিচালক এফএম এ বারী কাগজে কলমে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে থাকলেও নতুন প্রকল্পের মূল কাজ পরিচালনা করতেন চিটাগাং রাঙ্গাদিয়া ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিঃ থেকে সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে পে-রোলে আসা অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (রসায়ন) আব্দুর রহমান বাদশা। এখানে তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে বদলী করা হলে পিডির দায়িত্বে আবারো তিনি এ ফ্যাক্টরিতে যোগদান করে লুটপাটের মহোৎসবে মেতে উঠেছেন।

জানা গেছে,ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরির উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১৬ সালে ড্রাই প্রসেস প্রকল্প বাস্তবায়নে ৮৯২ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয় সরকার।আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি পায় নানজিং সী-হোপ নামের একটি চায়না কোম্পানি।বর্তমানে ফ্যাক্টরিতে কোটি-কোটি টাকার নির্মাণ কাজ চলমান। চায়না কোম্পানির কাছ থেকে এক নিকটাত্মীয়ের নামে সব কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন বাদশাহ । যার সবই দেখাশোনা ও লেন-দেন করছেন তিনি। প্রকল্পের কাজ নামে-বেনামে বাগিয়ে দেয়ায় এখানে একটি বিশাল সিন্ডিকেট রয়েছে তার। এ সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই ব্যাপক অনিয়মের মধ্য দিয়ে নতুন প্রকল্পের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। স্থানীয় লোকজনের ধারণা একটি দায়সারা সিমেন্ট ফ্যাক্টরি তৈরি করতে যাচ্ছে তারা। একটি সূত্র জানায়, আব্দুর রহমান বাদশার ফ্যাক্টরির বড়ধরনের সবগুলো দুর্নীতির সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সম্পৃক্ততা রয়েছে।ওই কর্মকর্তা (পিডি) ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে কর্মরত অবস্থায় বিনা টেন্ডারে মাত্র ৩৫ লাখ টাকায় পুরাতন একটি পাওয়ার প্লান্ট বিক্রি করেছিলেন।পরে স্থানীয়দের প্রতিবাদের মুখে বাধ্য হয়ে টেন্ডারের মাধ্যমে প্লান্টটি আড়াই কোটি টাকায় বিক্রি করা হয়। ভারতের নিজস্ব খনি প্রকল্প থেকে রজ্জুপথে আসা ফ্যাক্টরির চুনাপাথর সেনাকল্যাণ সংস্থার নাম ব্যবহার করে ১৮শত টাকা টনের পাথর খোলাবাজারে প্রতিটন ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে ফ্যাক্টরির কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে বাদশাসহ তার চক্রের বিরুদ্ধে।

বর্তমানে বাদশাহ সিন্ডিকেটে রয়েছেন সিমেন্ট ফ্যাক্টরির ব্যবস্থাপনা পরিচালক অমল কৃষ্ণ হাওলাদার, জিএম(এডমিন) সাইফুল ইসলাম ও কয়েকজন ফ্যাক্টরির শ্রমিক। নতুন ও পুরাতন প্রজেক্ট তারাই লুটেপুটে খাচ্ছে।পুরাতন ফ্যাক্টরি সম্পুর্ণ চালু রেখে নয়া প্রজেক্টে কাজ করার কথা রয়েছে। কিন্তু ১৯৩৭ সালে প্রতিষ্ঠিত পুরানো প্রকল্পের অধিকাংশই তারা বিক্রি করে দিয়েছে। ১০০টন স্ক্যাপ মালের টেন্ডার করে তারা পাচার করছে কয়েক হাজার টন স্ক্যাপ মাল। বিনা টেন্ডারে হাজার-হাজার টন স্ক্যাপ ও যন্ত্রাংশ বিক্রি করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এ সিন্ডিকেট চক্র।

২ কোটি টাকার ব্যাংক গ্যারান্টি জাল করে ২০১৮ সালে ৯২ লক্ষ টাকা মুল্যের সিমেন্ট,ফ্যাক্টরি থেকে উত্তোলন করে নিয়ে যায় বাদশাহ চক্র। ওই বছরের ১৩ ডিসেম্বর পূবালী ব্যাংক ছাতক শাখার হিসাব বিবরণীতে জালিয়াতির ধরা পড়ে। জানাগেছে সম্পা এন্টারপ্রাইজ ও হানিফ এন্টারপ্রাইজ নামের দুইটি প্রতিষ্ঠানের নামে ঢাকার একটি ব্যাংক থেকে ২ কোটি টাকার ব্যাংক গ্যারান্টি নিয়ে ভুয়া ক্রেডিট ভাউচার দিয়ে ৯২ লক্ষ টাকার সিমেন্ট জালিয়াতি করে নেয় বাদশাহ চক্র। এটি ছিলো ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরির ইতিহাসে ভয়াবহ জালিয়াতির ঘটনা। নতুন প্রজেক্টের শুরুতেই ২৫ কোটি টাকা লুপাটের অভিযোগ সহ পুরোনো প্রকল্পের বিএমআর ই’র নামে বরাদ্দের ১৩ কোটি টাকার মধ্যে ১২ কোটি টাকাই লোপাটের অভিযোগ রয়েছে এ চক্রের কয়েকজনের বিরুদ্ধে। বর্তমানে ফ্যাক্টরির প্রায় সকল শ্রমিকদের বদলী করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে একসাথে ৪৭ জন শ্রমিককে বদলী করা হয়। এক-এক করে ও শ্রমিকদের বদলীও করা হচ্ছে। কিন্ত এসবের তালিকায় পিডি আব্দুর রহমান বাদশাহ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক অমল কৃষ্ণ হাওলাদার, জিএম( এডমিন) সাইফুল ইসলামের কোন লোক নেই। যারা তাদের অপকর্ম ও ব্যবসার সাথে জড়িত এবং মাসের পর মাস ডিউটি না করে ফ্যাক্টরি থেকে বেতন ভাতা নিচ্ছে তাদের বদলী করা হচ্ছেনা। দীর্ঘ আরেকটি বদলীর তালিকা হচ্ছে তাতেও ওই সিন্ডিকেটের আস্থাভাজনদের কারো নাম নেই বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।এক্ষেত্রে তদবির বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে সিন্ডিকেট ও কয়েকজন শ্রমিক।অসহায়এক মুক্তিযোদ্ধা
সন্তানকে তার পিতা অনেক আকুতি করে ও রাখতে পারেন নি।

২০১৮ সালের ব্যাংক গ্যারান্টি জাল করে ভয়াবহ জালিয়াতির মাধ্যমে সিমেন্ট উত্তোলনের বিষয়টি স্বীকার করে ফ্যাক্টরির সিবিএ সেক্রেটারি আব্দুল কুদ্দুস জানান, এ বিষয়টি নিস্পত্তি হয়ে গেছে। স্থানীয় নুরুল আমিন, আব্দুল খালিক,তানভীর আহমদ,জুয়েল মিয়া, আলকাছ আলী, মাহবুব আহমদসহ অনেক লোকজন জানান, আব্দুর রহমান বাদশাই ফ্যাক্টরির অঘোষিত সম্রাট। তার সিন্ডিকেটে রয়েছেন এমডি, জিএম এডমিন সহ কয়েকজন কর্মকর্তা ও কয়েকজন শ্রমিক। পুরাতন ও নতুন নির্মানাধীন দুটি ফ্যাক্টরিই লুটেপুটে খাচ্ছে তারা। বন্যার সময় ছাড়া ৩/৪ মাস ধরে প্রতি রাতেই লক্ষাধিক টাকা মুল্যের মালামাল এ চক্র চোরাই পথে বিক্রি করে যাচ্ছে। স্থানীয়রা তাদের এসব অবৈধ কাজে বাঁধা দিলে কর্তৃপক্ষ বলছেন টেন্ডারের মাল। মামলা- হামলার ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন তারা। ফ্যাক্টরির ব্যবস্থাপনা পরিচালক অমল কৃষ্ণ হাওলাদার, সিন্ডিকেটের বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, সব বিষয় প্রকল্প পরিচালক জানেন। তিনি বিস্তারিত বলতে পারবেন। মোবাইল ফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলে পিডি আব্দুর রহমান বাদশাহ ফোন রিসিভ করেন নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

Registration Form

[user_registration_form id=”154″]

পুরাতন সংবাদ দেখুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০  

বিভাগের খবর দেখুন