শিরোনাম
এনসিপির নতুন নেতৃত্ব:মৌলভীবাজারে আহ্বায়ক কমিটি গঠিত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার: সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি নেতার প্রাথমিক সদস্য পদ ফিরিয়ে দিল কেন্দ্র মিরপুর প্রেসক্লাবের নতুন কমিটি ঘোষণা: সভাপতি আমিরুজ্জামান, সম্পাদক জহিরুল জাতীয় ছাত্রশক্তির বগুড়া জেলা কমিটির মুখপাত্র ঐশী জামান দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ২৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও প্রাণনাশের হুমকির মামলায অবশেষে জামিন পেলেন মডেল ও অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী চলতি বছরের ২৫ মার্চ জামিনে মুক্তি পান শমশের মুবিন চৌধুরী হবিগঞ্জের নতুন এসপি:গৌতম কুমার বিশ্বাস দৈনিক রুদ্র বাংলা সম্মাননা পদক ২০২৫: খোলা বাজার পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মাহাবুব আলমকে সম্মাননা প্রদান মুক্তিযোদ্ধা দলের কমিটি পুনর্গঠন এখন সময়ের দাবি সুনামগঞ্জে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি দাসের ৫৪ তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ১২:২৩ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

মাগুরছড়া ট্রাজেডির ২৩ বছর, এখনও আদায় হয়নি ক্ষতিপূরণ

Coder Boss / ৭৫১ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শনিবার, ১৩ জুন, ২০২০

Manual7 Ad Code

 

Manual6 Ad Code

বিকাশ মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি।।

আবার ফিরে এসেছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জবাসীর ভয়াল স্মৃতির দিন ১৪ জুন। রবিবার মাগুরছড়া ট্রাজেডির ২৩ তম বার্ষিকী। এদিন আসলেই মৌলভীবাজারবাসীকে মনে করিয়ে দেয় সেই ভয়াল স্মৃতির কথা। সেদিন মানুষের মন কত ভীত ছিল। কখন এসে আগুনের লেলিহান শিখায় গ্রাস করে ফেলবে সবকিছু। ১৯৯৭ সালের ১৪ জুন মধ্যরাত ১টা ৪৫ মিনিটে মাগুরছড়া গ্যাসকূপে বিস্ফোরণের প্রচন্ড শব্দে কেঁপে উঠেছিল গোটা কমলগঞ্জ। আগুনের লেলিহান শিখায় লাল হয়ে উঠেছিল মৌলভীবাজার জেলার সুনীল আকাশ। ভীত-সন্ত্রস্ত লোকজন ঘরের মালামাল রেখে প্রাণভয়ে ছুটেছিল দিগি¦দিক।

 

Manual1 Ad Code

প্রায় ৫০০ ফুট উচ্চতায় লাফিয়ে উঠা আগুনের লেলিহান শিখায় লন্ডভন্ড করে দিয়েছিল বিস্তীর্ণ এলাকা। আগুনের শিখায় গ্যাসফিল্ড সংলগ্ন লাউয়াছড়া রিজার্ভ ফরেষ্ট, মাগুরছড়া খাসিয়াপুঞ্জি, জীববৈচিত্র্য, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন, ফুলবাড়ী চা বাগান, সিলেট-ঢাকা ও সিলেট- চট্টগ্রাম রেলপথ এবং কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়কের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। দেশের ইতিহাসে ভয়াবহতম এ অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ হয় ঘনগভীর বন ও এর সাহচর্যে থাকা বিপুল সংখ্যক প্রাণীবৈচিত্র্য। ক্ষতির মুখোমুখি হয় রেল ও সড়কপথ, পানজুম, বিদ্যুৎ লাইনসহ এই অঞ্চলের অসংখ্য স্থাপনা। দুর্ঘটনার জন্য দায়ী মার্কিন গ্যাস উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান অক্সিডেন্টাল ক্ষয়ক্ষতির আংশিক পরিশোধ করলেও কোন ক্ষতিপূরণ পায়নি বন বিভাগ।

ফিরে আসেনি প্রাকৃতিক বনের স্বাভাবিকতা। পূর্ণ ক্ষতিপূরণ না দিয়েই ইউনিকলের কাছে হস্তান্তরের পর সর্বশেষ শেভরনের কাছে বিক্রি হয়েছে এই গ্যাসক্ষেত্র। শেভরন ২০০৮ সালে ঐ বনে ত্রি-মাত্রিক ভূতাত্তি¡ক জরিপ কাজ সম্পন্ন করে। এতেও স্থানীয়ভাবে অনেকেই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। ২০১২ সনে শেভরন মৌলভীবাজার ১৪নং বলকের অধীনে নূরজাহান, ফুলবাড়ি এবং জাগছড়া চা বাগানের সবুজ বেষ্টনি কেটে কূপ খননের পর এসব কূপ থেকে চা বাগানের ভেতর দিয়ে ড্রেন খনন করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে উত্তোলিত গ্যাস কালাছড়ার মাধ্যমে রশীদপুর গ্রীডে স্থানান্তর চলছে। মাগুরছড়া ট্র্যাজেডির ২৩ বছরেও জনসম্মুখে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রকাশ হয়নি, আদায় হয়নি ক্ষতিপূরণ। উল্লেখ্য যে, কমলগঞ্জ উপজেলার সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভিতরে লাউয়াছড়া ফরেষ্ট বিটের অভ্যন্তরে মাগুরছড়া এলাকায় ১৯৮৪-৮৬ ও ১৯৯৪ সালে সাইসনিক সার্ভেতে গ্যাস মজুদের সন্ধান পাওয়া যায়।

এ প্রেক্ষিতে উৎপাদন ভাগাভাগির চুক্তিতে ১৯৯৫ সালের ১১ জানুয়ারী মার্কিন বহুজাতিক তেল ও গ্যাস উত্তোলণকারী কোম্পানী অক্সিডেন্টালের সাথে বাংলাদেশ সরকারের সাথে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় এবং গ্যাস উত্তোলনের জন্য ৬৫০ কোটি টাকা ব্যয়ের অনুমতি প্রদান করা হয়। দায়িত্ব গ্রহণের পর অক্সিডেন্টাল কোম্পানী মাগুরছড়ায় গ্যাস ফিল্ডের ড্রিলিং কাজের জন্য সাবলিজ প্রদান করেছিল ডিউটেক নামের জার্মান কোম্পানীর কাছে। গ্যাস উত্তোলনে ১৪ নং বøকের মাগুরছড়াস্থ মৌলভীবাজার-১ গ্যাসকূপের খননকালে ৮৫০ মিটার গভীরে যেতেই ১৯৯৭ সালের ১৪ জুন মধ্য রাতে ঘটে ভয়াবহ বিষ্ফোরণ। এ সময় শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ ১৫ কিঃমিঃ (৩৩ হাজার কেভি) উচ্চতাপ বৈদ্যুতিক লাইন পুড়ে নষ্ট হয়। কুলাউড়া, বড়লেখা ও কমলগঞ্জ উপজেলার ৫০ টি চাবাগানে দীর্ঘদিন স্থায়ীভাবে বিদ্যুৎ সংকট দেখা দেয়। ৬৯৫ হেক্টর বনাঞ্চলের বৃক্ষ সম্পদ, পরিবেশ ও জীববৈচিত্রের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এছাড়া ২৪৫ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পুড়ে নষ্ট হয়, যার বাজার মূল্য দাঁড়ায় ৫০ কোটি ডলার। গ্যাস বিস্ফোরনের পর অক্সিডেন্টাল তাদের সহোদর ইউনোকলের কাছে দায়িত্ব দিয়ে এ দেশ ত্যাগ করলে দুই বছর পর ফুলবাড়ি চা বাগান, পার্শ্ববর্তী মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির বাড়ি-ঘর, পান জুম এলাকার ক্ষয়ক্ষতি বাবদ আংশিক টাকা প্রদান করে ইউনোকল। অন্যদিকে দূর্ঘটনাস্থলের কাছাকাছি কমলগঞ্জ শ্রীমঙ্গল সড়ক ধারে সামাজিক বনায়নের রোপিত গাছের জন্য ৩ ব্যক্তিকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতি পূরণ প্রদান করা হয়। দীর্ঘ ৬ মাস কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকার কারণে ক্ষতি পূরণ বাবত বাস মালিক সমিতিকে ২৫ লাখ টাকা প্রদান করা হয়।

Manual7 Ad Code

এছাড়াও বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন সময়ে কিছু ক্ষতিপুরণ দেয়া হয়েছে। কিন্তু পরিবেশ ও গ্যাস বাবত কোন ক্ষতিপূরণ করা হয়নি এবং কোন সরকারই ক্ষতিপূরণ আদায়ে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় জনমনে সন্দেহ বিরাজ করছে। দুর্ঘটনার পর তৎকালীন সরকারের খনিজ ও জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহফুজুল ইসলামকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল।

 

Manual3 Ad Code

তদন্ত কমিটি ১৯৯৭ সালের ৩০ জুলাই মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট পেশ করে। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী অক্সিডেন্টালের দায়িত্বহীনতাকেই দায়ী করা হয়। কিন্তু আজও মাগুরছড়া গ্যাস বিষ্ফোরণে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়নি। ক্ষতিগ্রস্থদের সকলে পায়নি ক্ষতিপূরণ। পূরণ হয়নি কমলগঞ্জবাসীর ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগের দাবীও। মাগুরছড়া ট্র্যাজেডির ২৩তম বার্ষিকী উপলক্ষে ১৪ জুন রবিবার কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন তাদের দাবীর স্বপক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্যে দিয়ে দিবসটি পালন করবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

Registration Form

[user_registration_form id=”154″]

বিভাগের খবর দেখুন

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code
Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code