রিপন মিয়া মৌলভীবাজার প্রতিনিধি।
মৌলভীবাজারে জোড়া লাগানো দুই কন্যা শিশুর জন্ম হয়েছে। এ ঘটনাকে বিরল হিসেবে দেখছেন চিকিৎসকেরা। এদিকে দুই মেয়েকে আলাদা করতে প্রধানমন্ত্রী সহযোগিতা চান দরিদ্র বাবা—মা।
বুধবার (৫ মে) রাতে মৌলভীবাজার শহরের জান্নাত প্রাইভেট হাসপাতালে শিশু দুটির জন্ম হয়।
বৃহস্পতিবার (৬ মে) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দুইবোনের বুক ও পেট একসাথে জোড়া লাগানো। তবে তাদের মাথা, হাত, পা, মুখ ও অন্যান্য অঙ্গ আলাদা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, মৌলভীবাজার—২৫০ শয্যা হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক ডাক্তার ফারজানা হক পর্ণা বুধবার রাতে সফল এই অস্ত্রোপাচারটি করেন। সাথে ছিলেন এনেস্থেসিস্ট ডাক্তার বি এস এম এরশাদ। অস্ত্রোপাচারে (সিজার) সময় লাগে প্রায় এক ঘণ্টা।
ফারজানা হক পর্ণা বলেন, তাদের শারীরিক অবস্থা এখন ভালো। মুখে খাবার নিচ্ছে। এমনিতে কোনো সমস্যা নাই। তবে এসব শিশুদের বাঁচানো কঠিন, অনেকটা বিরল বলা যায়। দুইবোনকে আলাদা করতে ঢাকা শিশু হাসপাতালে পাঠাতে হবে। সেখানে মেডিকেল বোর্ড বসে সিদ্ধান্ত নেবেন তাদের কি চিকিৎসা করা উচিত।
তবে এসব ক্ষেত্রে অস্ত্রোপাচারের পর জোড়া লাগানো শিশুদের সাধারণত বাঁচানোর ঘটনা বিরল বলে জানান এই গাইনি চিকিৎসক।
জান্নাত প্রাইভেট হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শামীম আলম বলেন, ‘আল্ট্রাসনোগ্রাম করে দেখতে হবে বাচ্চা দুটির হাড় এবং পাকস্থলী আলাদা কি—না। এগুলো আলাদা হলে অস্ত্রোপচার করে তাদের পৃথক করা সম্ভব। তবে যত দ্রুত সম্ভব জাতীয় শিশু হাসপাতালে গিয়ে বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা নিলে বাচ্চাদের জন্য ভালো হয়। বড় হলে তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপনে কষ্ট হবে।’
জোড়া দুইবোনের বাবা জুয়েল আহমদ জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি কমলগঞ্জ উপজেলার শমমেরনগর গ্রামের সিঙ্গরাউলি গ্রামে। পেশায় তিনি পান দোকানদার। জুয়েল মিয়া ও তাকলিমা দম্পতির চার বছরের আরেকটি কন্যা শিশু রয়েছে।
জুয়েল আহমদ এ প্রতিবেদককে বলেন, জোড়া লাগানো দুই শিশুর জন্মের পর মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এম এ হক তাদের দেখেছেন। তিনি শিশু দুটিকে ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন।
তবে জুয়েল আহমদ বলেন, মেয়ে দুটির চিকিৎসার সামর্থ্য তাদের নেই। শমসেরনগর বাজারের পান দোকানে চলে তাদের সংসার। দুই মেয়ের সুস্থ—স্বাভাবিক জীবনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চান দরিদ্র জুয়েল আহমদ। সামর্থ্যবানরাও এগিয়ে আসবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন জুয়েল।