মশিউর রহমান, টাংগাইল ঃ
টাংগাইলের বাসাইল উপজেলা নিম্নাঞ্চল হওয়ায় এখানকার বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, অধিকাংশ এলাকা এখনও বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে। শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দেওয়ায় খেটে খাওয়া মানুষের জীবনে হতাশার জন্ম নিচ্ছে এমনকি দূর্ভোগের স্বীকার হচ্ছে। মহামারী করোনা ভাইরাসের ধকল না কাটতেই বন্যায় পানি বন্ধি হয়ে আয় – রোজগার একবারে বন্ধ, অনেকের ঘরে চুলা জ্বলছে না। বন্যা কবলিত এলাকার গ্রামীণ রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে বীজতলা, রোপা আমন ধান, সবজি ক্ষেত, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কালভার্ট, ভেঙ্গেছে রাস্তা-ঘাট। বানভাসি মানুষগুলো গবাদিপশু নিয়ে পড়েছেন মহাবিপাকে। বানভাসিদের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পারাপারের জন্য নৌকা কিংবা কলাগাছের ভেলাই একমাত্র ভরসা। বাসাইল সদর ইউনিয়নের মিরিকপুর, রাশড়া, ইশ্বরগঞ্জ, হান্দুলী, কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের আদাজান, কোদালিয়াপাড়া, যৌতুকি,জিকাতলী পাড়া, মটেশ্বর, তারাবাড়ি, সৈদামপুর পুর্বপৌলী, সিঙ্গারডাক, কালাচান পাড়া, কাশিল ইউনিয়নের ফুলবাড়ি, বাঘিল, স্থলবল্লা, ফুলকী ইউনিয়নের ফুলকী দক্ষিণপাড়া, বালিয়া, খাটরা, নিড়াইল, করোটিয়াপাড়া, ময়থা, কাউলজানী ইউনিয়নের বাদিয়াজান, সুন্না, বার্থা, গিলাবাড়ি, ডুমনীবাড়ি, কাঙ্গগাগলীছেও এবং হাবলা ইউনিয়নের টেংগুরিয়াপাড়া, ছয়শত, জীবনেশ্বর, থুপিয়া, গুল্লা ও বয়রা এসব এলাকার মানুষের নৌকা ছাড়া যাতায়াতের বিকল্প আর কোনো উপায় নাই। কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুন অর রশিদ বলেন যে, তাঁর ইউনিয়নে প্রায় প্রতিটি গ্রামের মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে। পাকা কাঁচা রাস্তাগুলো তলিয়ে গেছে, কালর্ভাট ভেঙ্গে গেছে। রাস্তা ভেঙ্গে অনেকে জায়গায় বড়বড় খাদের সৃষ্টি হয়েছে। নৌকা ছাড়া তো আসা – যাওয়া করাই মুশকিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে আমরা বন্যা দুর্গত এলাকায় গিয়ে ত্রাণ পৌঁছে দিতে সক্ষম হই। ৩৩৩ নম্বরে কল দিলেও আমাদের পক্ষ থেকে খাদ্য সামগ্রী প্রদান করা হয়, ত্রাণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা উপজেলা প্রশাসনের রয়েছে বলে বাসাইল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মনজুর হোসেন সাংবাদিককে এ কথা জানান। ভৌগলিক ভাবে বাসাইল একটি নীচু এলাকা, প্রতি বছরই বন্যার সঙ্গে যুদ্ধ করেই বাঁচতে হয়। এবারও উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নেই মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে। রাস্তা ঘাট ভেঙ্গে গ্রামীণ অবকাঠামোগত ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। পানি-বন্ধি সহায়তার জন্য ত্রাণ কার্যক্রম চলছে এমনকি অব্যাহত থাকবে। এলাকায় আরও পর্যাপ্ত ত্রাণসহযোগিতার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে বলে বাসাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী অলিদ ইসলাম সাংবাদিককে এ কথা জানান।