স্টাফ রিপোর্টার:
সুনামগঞ্জে বেশিরভাগ মানুষের বসবাস হাওর অঞ্চলে। অতিবৃষ্টি ও চেরাপুঞ্জির পাহাড়ি ঢলে যখন ভয়াবহ রুপ নেয় হাওরগুলো,তখন মহাবিপদে পড়ে যান হাওরে বসবাসরত হতদরিদ্র-অসহায় মৎসজীবি ও কৃষকেরা। বন্যার ক্ষতি থেকে এসব মানুষদের বাঁচাতে সুনামগঞ্জে বিকল্প ভাসমান ঘরের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালু করেছে প্রশাসন। পরীক্ষামূলক কার্যক্রম সফল হলে ভাসমান ঘর নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সাম্প্রতিক বন্যায় বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেপুর, দক্ষিণ বাদাঘাট ও পলাশ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের শতভাগ ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়। সরকারিভাবে ইতোমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল,দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়,জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সম্পূর্ণ ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ৭১৭ টি পরিবারকে নগদ অর্থ ও ঢেউটিন এবং বেসরকারি উদ্যোগে ৭৩ টি পরিবারকে ঢেউটিন প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার (১ আগস্ট) বিকেলে সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভপুর উপজেলার পলাশ ইউনিয়নের প্যারীনগর গ্রামের ভূমিহীন কৃষক সমীর দাশকে ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাদি-উর-রহিম জাদিদ।ইউএনও সাদি-উর-রহিম বলেন,’ গত ০৪ জুলাই বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) জনাব মোঃ তালুত স্যার বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি হতে রক্ষার্থে ভাসমান ঘরের প্রয়োজনীয়তা ও আইডিয়া দিলে বেসরকারিভাবে কিছু ফান্ড কালেকশন করার পর,প্যারিনগরে অবস্থিত পূর্নাঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত জনাব সমীর দাসের ঘর পরিদর্শন করি এবং ভাসমান ঘর স্থাপনের স্থান নির্ধারণ করি।
পরবর্তীতে হাওর বিলাসের সামনে স্থাপিত ভাসমান হাওর ভিউ ক্যাফের আদলে প্লাটফর্ম তৈরি করে স্থানীয় মিস্ত্রি নজরুল ও আমার সহকর্মীদের সহযোগিতায় মাত্র ১৪ দিনে ঘর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। সমীর দাসকে ২ টি শোবার ঘর ও ১টি রান্নাঘর বিশিষ্ট ঘরটি হস্তান্তর করা হয়। ঐদিকে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার জন্য অন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে ‘।
তিনি আরও বলেন,’ বন্যায় পানি বৃদ্ধি হলে ঘরটির প্লাটফর্মও সমানুপাতিকভাবে উঁচুতে উঠবে। সুনামগঞ্জ জেলায় হাওরে যাদের ঘর অবস্থিত এবং যারা অন্যত্র স্থানান্তরিত হতে ইচ্ছুক নয়,তাদের জন্য এরকম ঘর স্থাপন অনুকরণীয় হতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফিশিং উপযোগী স্থানে এরকম “ফ্লোটিং ভিলেজ” কনসেপ্ট চালু রয়েছে।
যেহেতু সুনামগঞ্জের হাওর অঞ্চলে লোকজন ছোট ছোট ঘরবাড়ি নির্মাণ করে জীবনযাপন করেন। বন্যা এলে তারা সমস্যায় পড়েন। বর্ষা মৌসুমে এ অঞ্চলের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পরীক্ষামূলকভাবে আপাতত একটি ভাসমান ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ঘরটি টেকসই ও পরিবেশসম্মত হলে ভবিষ্যতে ভাসমান ঘর নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে ‘।