অলিউর রহমান,বিয়ানিবাজার প্রতিনিধিঃ
বিয়ানীবাজারে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৯ বছর বয়সী শিশু সায়েম সুস্থ হওয়ার পথে। করোনা পজেটিভ শনাক্ত হওয়ায় গত ১৪ দিন ধরে নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছে মাথিউরা ইউনিয়নের নালবহর গ্রামের শিশু সায়েম আহমদ। সোমবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বশীলরা সায়েম ও তাঁর মায়ের শরীর থেকে দ্বিতীয় নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে প্রেরণ করেছেন। এছাড়াও এদিন তার বাড়ির লকডাউন তুলে দিয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদেরকে কোয়ারেন্টাইন মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বাড়ির পৃথক একটি কক্ষে মায়ের সেবায় আইসোলেশনে থাকাকালীন সায়েমের শারীরিক অবস্থা বেশ ভালো থাকায় এবং করোনার কোন উপসর্গ না থাকায় তাঁর দ্বিতীয় নমুনার রিপোর্টও নেগেটিভ আসবে- এমনটাই আশাবাদী স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীলরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ মে রাতে মাথিউরা ইউনিয়নের নালবহর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে সায়েম আহমদের শরীরে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। তবে তাঁর শরীরে করোনাভাইরাসের কোন উপসর্গ ছিল না। শারীরিকভাবে সুস্থ থাকায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মোতাবেক চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে বাড়িতে হোম আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হয় এবং তাকে ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফলমূল, গরম পানি, মাল্টা ও লেবুর রস, কালোজিরা খেতে দিয়েছি। এছাড়া তার বাড়িটি লকডাউন করার পাশাপাশি পরিবারের সকল সদস্যদেরকে কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়। করোনা পজেটিভ শনাক্ত হবার পর থেকে তার সাথে মা নাজমা বেগম রয়েছেন। তবে একই কক্ষে থাকলেও মা থাকেন আলাদা বিছানায়। তবে সায়েম একজন শিশু হওয়ায় সার্বক্ষনিক তাঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীলরা।
জানা গেছে, করোনা পজেটিভ শিশু সায়েমের পিতা আবুল কালাম করোনায় মৃত একজনের সরাসরি সংস্পর্শে গিয়েছিলেন। আবুল কাশেম নামের ওই করোনা রোগী গত ২০ দিবাগত রাতে সিলেট সামসুদ্দীন হাসপাতালে মারা যান। প্রদিন ২১ মে তাকে মাটিজুরার মালোপাড়ায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। আবুল কাশেম আর আবুল কালাম ঘনিষ্ট আত্মীয়। এ সুবাধে কালাম নিহত কাশেমের সাথে সরাসরি সংস্পর্শে যান। পরে তিনি মাত্র একদিনের জন্য নিজ বাড়ি নালবহরে আসেন। আর এতেই সংক্রমিত হয়ে পড়ে শিশু সায়েম। তবে ছেলে সায়েম সংক্রমিত হলেও আবুল কালামের করোনার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাঃ আবু ইসহাক আজাদ বলেন, কারও করোনা পজিটিভ শনাক্ত হলে সাধারনত আইসোলেশনে থাকতে বলা হয়। সায়েমের শরীরে কোন উপসর্গ ছিল না। এরপরও তাকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মোতাবেক ঔষধপত্র ও আইসোলেশনের থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ১৪ দিন হোমা আইসোলেশনে থাকার পরও শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়েনি। তবুও আমরা তার ও তার মায়ের শরীর থেকে দ্বিতীয় নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে প্রেরণ করেছি। নেগেটিভ রিপোর্ট আসলে তাদেরকে সুস্থ হিসেবে ছাড়পত্র দেয়া হবে।