শিরোনাম
তেলিয়াপাড়া চা-বাগানে পুনাকের বার্ষিক বনভোজন উদযাপন জেলা পুলিশের মাস্টার প্যারেড ও মাসিক কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত জৈন্তাপুরে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী’র স্টল পরিদর্শনে জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান  রাষ্ট্র ও সমাজের কল্যাণে ইমামগণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন-জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান ছাতকে সেবা ব্লাড ফাউন্ডেশন ইসলামপুর ইউপি’র উদ্যোগে ঈদ সামগ্রী বিতরণ ৮৮,০০০ টাকার জাল নোটসহ চুনারুঘাটের ‘জামাল মিয়া’ গ্রেফতার বছর ঘুরে আইলো আবার ‘বৈশাখ’ জৈন্তাপুর প্রবাসী গ্রুপ কাতার শাখার ঈদ আনন্দ ভ্রমণ বিশারকান্দি ইউনিয়ন যুবদলের কমিটি গঠন আবুল কালাম আহবায়ক, ফিরোজ সদস্য সচিব
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৩০ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

এটিএম শামসুজ্জামান চলে যাবার এক বছর।

Satyajit Das / ৩৫৬ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : রবিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

সিলেট বিনোদন ডেস্ক:ছয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত আবু তাহের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান। যাকে বাংলাদেশ ও ভারতীয় বাংলা সিনেমাঙ্গনে ‘এটিএম শামসুজ্জামান ‘ নামে সকলে চেনেন। তিনি ছিলেন একজন বাংলাদেশী অভিনেতা, পরিচালক ও লেখক। এটিএম শামসুজ্জামান ১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের নোয়াখালীর দৌলতপুরে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি লক্ষীপুর জেলার ভোলাকোটের বড় বাড়ি আর ঢাকায় থাকতেন দেবেন্দ্রনাথ দাস লেনে। তাঁর পিতা নূরুজ্জামান ছিলেন নামকরা উকিল এবং শেরেবাংলা একে ফজলুল হকের সঙ্গে রাজনীতি করতেন। মাতা নুরুন্নেসা বেগম এর পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে আবু তাহের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান ছিলেন সবার বড়। তিনি ঢাকার পগোজ স্কুল,কলেজিয়েট স্কুল, রাজশাহীর লোকনাথ হাই স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন। পগোজ স্কুলে তার বন্ধু ছিলেন আরেক অভিনেতা প্রবীর মিত্র। তিনি ময়মনসিংহ সিটি কলেজিয়েট হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। তারপর জগন্নাথ কলেজে ভর্তি হন।

এটিএম শামসুজ্জামানের স্ত্রী রুনী জামান। দম্পত্য জীবনে তাঁদের ৩ ছেলে ও ৩ মেয়ে রয়েছে। ২০১২ সালের ১৩ মার্চ এটিএম শামসুজ্জামানের ছোট ছেলে এটিএম খলিকুজ্জামান কুশল নিজ বড় ভাই এটিএম কামালুজ্জামান কবিরকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন।হত্যাকাণ্ডের পর এটিএম শামসুজ্জামান নিজেই ছেলে কুশলের বিরুদ্ধে মামলা করেন। হত্যার অভিযোগে এটিএম খলিকুজ্জামান কুশলকে ২০১৩ সালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত।

এটিএম শামসুজ্জামানের চলচ্চিত্র পর্দায় আগমন ১৯৬৫ সালে। তাঁর অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র নয়া জিন্দেগানি চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়নি।পরে ১৯৬৮ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার এতটুকু আশা চলচ্চিত্রে তাকে খবরের কাগজ বিক্রেতা চরিত্রে প্রথমবারের মত পর্দায় দেখা যায়। এরপর তিনি সুয়োরানী দুয়োরাণী (১৯৬৮),মলুয়া (১৯৬৯),বড় ভাই (১৯৭০) চলচ্চিত্রে ছোট চরিত্রে অভিনয় করেন। তিনি মলুয়া চলচ্চিত্রের সংলাপও রচনা করেন। তিনি প্রথম কাহিনী ও চিত্রনাট্য লিখেছেন জলছবি (১৯৭১) চলচ্চিত্রের জন্য। ছবির পরিচালক ছিলেন নারায়ণ ঘোষ মিতা এবং এই ছবির মাধ্যমেই অভিনেতা ফারুকের চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে।বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পটভূমিতে নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ওরা ১১জন (১৯৭২) চলচ্চিত্রে এবং জীবনীমূলক লালন ফকির (১৯৭২) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। দ্বিতীয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি ১ম বাচসাস পুরস্কারে অভিনয়ের জন্য একটি বিশেষ পুরস্কার অর্জন করেন। ১৯৭৫ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী লাঠীয়াল চলচ্চিত্রে তিনি খল চরিত্রে অভিনয় করেন। তিনি ১৯৭৬ সালে চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের নয়নমণি চলচ্চিত্রে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে আলোচনা আসেন। এছাড়াও খল চরিত্রে তার কিছু উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল-অশিক্ষিত,গোলাপী এখন ট্রেনে,পদ্মা মেঘনা যমুনা,স্বপ্নের নায়ক। তিনি কৌতুক অভিনেতা হিসেবে যাদুর বাঁশি,রামের সুমতি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৮৭ সালে তার নিজের লেখা কাহিনিতে আফতাব খান টুলুর দায়ী কে? চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ও শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার বিভাগে বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও বেশ কিছু চলচ্চিত্রে তিনি পার্শ্ব-চরিত্রে অভিনয় করেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে – অনন্ত প্রেম,দোলনা,অচেনা।

তিনি ম্যাডাম ফুলি (১৯৯৯) ও চুড়িওয়ালা (২০০১) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ২০০৫ সালে তিনি জহির রায়হানের হাজার বছর ধরে উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত একই নামের চলচ্চিত্রে মকবুল চরিত্রে অভিনয় করেন। এটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে। একই বছর তিনি তার নিজের লেখা কাহিনিতে সালাউদ্দিন লাভলুর পরিচালনায় অভিষেক চলচ্চিত্র মোল্লা বাড়ীর বউ-এ গাজী এবাদত মোল্লা চরিত্রে অভিনয় করেন। এই কাজের জন্য তিনি তারকা জরিপে সেরা চলচ্চিত্র অভিনেতা বিভাগে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া তিনি মন বসে না পড়ার টেবিলে (২০০৯) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা বিভাগে তার চতুর্থ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ২০০৯ সালে শাবনূর-রিয়াজ জুটির এবাদত ছবি দিয়ে তাঁর চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে অভিষেক ঘটে।তিনি সৈয়দ শামসুল হকের নিষিদ্ধ লোবান উপন্যাস অবলম্বনে নাসির উদ্দীন ইউসুফ নির্মিত গেরিলা (২০১১) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য ১৪তম মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে একটি বিশেষ পুরস্কার লাভ করেন। তিনি রেদওয়ান রনির পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র চোরাবালি-তে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব-চরিত্রে অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

উল্লেখ্য যে,’২০২১ সালের ফেব্রুয়ারীর ২০ তারিখ রোজ শনিবার সকাল ৯টা ০৬ মিনিটে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার সুত্রাপুরের নিজ বাসায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিলো ৮০ বছর। মৃত্যুর আগের দিন শুক্রবার(১৯ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে উনাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়েছিলো,কারণ উনি হাসপাতালে থাকতে চাইছিলেন না। এর আগে বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) সকালে পুরান ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল এটিএম শামসুজ্জামানকে। তাঁর অক্সিজেন লেবেল কমে গিয়েছিল,তাই হাসপাতালে ডা: আতাউর রহমান খানের তত্ত্বাবধানে ছিলেন জনপ্রিয় এ অভিনেতা। তাঁর মরদেহ জুরাইন কবরস্থানে তাঁর বড় ছেলে কামরুজ্জামান কবীরের পাশে সমাহিত করা হয়েছে ‘।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

Registration Form

[user_registration_form id=”154″]

পুরাতন সংবাদ দেখুন

বিভাগের খবর দেখুন